ই-পাসপোর্ট কী?এবং কিভাবে ই-পাসপোর্ট করতে হয় বিস্তারিত পড়ুনঃ

পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে কার ভালো লাগে? কখনো তো দালালের খপ্পরে পড়ে অনেক টাকা হারিয়ে যায়। এই সকল ধরনের ঝামেলা থেকে আপনি এবার রেহাই পাবেন। বাংলাদেশে চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। এর কল্যাণে আপনাকে আর লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হবে না। সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে আপনি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারছেন। নিচে ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

ই-পাসপোর্ট কী?এবং কিভাবে ই-পাসপোর্ট করতে হয়
ই-পাসপোর্ট কী?এবং কিভাবে ই-পাসপোর্ট করতে হয়

ই-পাসপোর্ট কী?

ই-পাসপোর্ট একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট।  এতে একটি ইলেকট্রনিক চিপের মধ্যে পাসপোর্টধারীর পরিচয় সনাক্তকারী বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এতে বায়োমেট্রিক ও বায়োগ্রাফিক সর্বমোট তথ্য থাকবে ৪১টি। এই ৪১টির মধ্যে ২৬টি তথ্য খালি চোখে দেখা যাবে। বিশ্বের কাছে ই-পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য এখানে ২টি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে। এই নিরাপত্তা বিশেষ যন্ত্র ছাড়া বুঝা যাবে না। অর্থাৎ বলতে গেলে ই-পাসপোর্টের বই এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতো একই রকমের থাকবে। শুধুমাত্র এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুইটি পাতা থাকে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে বরং পালিমারের তৈরি একটি কার্ড ও অ্যান্টেনা থাকবে। সেই কার্ডের ভিতরেই থাকবে  ইলেকট্রনিক চিপটি। বিশ্বের ১১৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করে। জানুয়ারি ২২, ২০২০ এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। 

এমআরপি আর ই-পাসপোর্টের পার্থক্যঃ

মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে (এমআরপি ) বার কোড থাকে এবং আরো কিছু ফিচার থাকে যার ফলে বিশেষ মেশিনে পাসপোর্ট দিলে পাসপোর্টের মৌলিক তথ্যগুলো মেশিনে চলে আসে। এটি জাল করা সম্ভব নয় এবং ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই বাছাই করেই  মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে সিল দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে ই-পাসপোর্টধারী যন্ত্রের মাধ্যমে নিজে থেকেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। এই পাসপোর্টে যোগাযোগবিহীন স্মার্ট কার্ড, ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ (কম্পিউটার চিপ) এবং অ্যান্টেনা (চিপের পাওয়ার এবং যোগাযোগের জন্য) এম্বেসড করা থাকে। ই-পাসপোর্টটিতে পাতলা ঝিল্লি স্তরে এম্বেসড হলোগ্রাফিক চিত্রসহ ৩১টি আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত রয়েছে। এটি আলোর নিচে রঙ পরিবর্তন করে এবং চলন্ত হিসাবে প্রদর্শিত হয়। ই-পাসপোর্টধারীর ডেমোগ্রাফিক এবং বায়োমেট্রিক তথ্য অর্থাৎ হাতের ১০ আঙুলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট, আইরিস স্ক্যান, মুখের রঙিন ছবি এবং ডিজিটাল স্বাক্ষর ই-পাসপোর্টের  ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপে সংরক্ষণ করা হয়। এই সকল নিরাপত্তা প্রক্রিয়া যখন সঠিকভাবে শেষ হয় তখন পাবলিক কী ইনফ্রাষ্ট্রাকচার (পি কে আই) এর মাধ্যমে পাসপোর্টের চিপে যান্ত্রিকভাবে সংরক্ষিত ব্যক্তিগত তথ্যগুলোর বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করা হয়। ফলে এটিকে নকল করা ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। ই-পাসপোর্টটি পাঁচ বছর বা দশ বছরের জন্য বৈধ করা হয়েছে।

ই-পাসপোর্ট কিভাবে কাজ করে

ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) ই-পাসপোর্টের কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত তথ্যভান্ডার “পাবলিক কি ডাইরেক্টরি'(PKD) কে পরিচালনা করে। যেহেতু ই-পাসপোর্ট স্ক্যান করলে সকল তথ্য সংক্রিয়ভাবে যাচাই হয়ে যায় সেহেতু ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার মুখোমুখি হতে হয় না। ই-পাসপোর্ট দিয়ে সহজেই ই-গেট দিয়ে সীমান্ত পার হতে পারবে। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থল বন্দর কতৃপক্ষ PKD তে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারে। যার ফলে কোন দেশের দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদনকারীর সকল তথ্য PKD এর তথ্যের সাথে যাচাই-বাছাই করা হবে। এতে তুলনামূলক সময় কম লাগবে।

যেখানে ই-গেট থাকবে না, সেখানে ই-পাসপোর্ট  কিভাবে ইমিগ্রেশন হয়

যেহেতু ই-পাসপোর্ট দিয়ে ই গেট দিয়ে সীমান্ত পার হতে হয় সেহেতু ই-গেট না থাকলে অনেকেই ভাবেন ইমিগ্রেশনে সমস্যা হবে। কিন্তু এইরকম কোন সমস্যাই হবে না। ই-গেট না থাকলেও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা  ই পাসপোর্টটি স্ক্যান করে কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং পাসপোর্ট সংক্রান্ত সকল কাজ করবেন। ফলে ই-গেট না থাকলেও যাতায়াতে কোন সমস্যা হবে না। বরং কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরগুলোতে ই-গেটের সাথে প্রচলিত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাও চালু রাখবেন।

ই-পাসপোর্ট এর কালার কেমন

ই-পাসপোর্ট পুরাপুরি আগের পুরোনো মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের মতই দেখতে হবে। লাল, বেগুনি ও সবুজ এই তিন রঙেরই ই-পাসপোর্ট হবে। আবেদনের প্রেক্ষিতে আপনি সর্বোচ্চ ৬৪ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট নিতে পারেন৷

ই পাসপোর্ট এর সুবিধাঃ

বাংলাদেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইতোমধ্যে তিনটি ই-গেট বসানো হয়েছে। পাশপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আরও ৫০টি ই-গেট স্থাপন করার পরিকল্পনা আছে। ই পাসপোর্ট অত্যন্ত নিরাপত্তা সংবলিত একটি ব্যবস্থা। ই পাসপোর্ট এর আরো সুবিধা হলঃ

  • ই পাসপোর্ট এর জন্য এখন আর লাইনে ভিসা চেকিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। তাই খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন।
  • ই পাসপোর্ট এর তথ্য নকল, চুরি করা সম্ভব নয়।
  •  ই-পাসপোর্টের ৪২টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কারণে একে জাল করা সম্ভব না।
  • কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে লালবাতি জ্বলে উঠবে। ফলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সহজেই জানতে পারবে।
  • বয়স ভেদে পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ ও দশ বছর। যার ফলে প্রবাসীরা অনেক  উপকৃত হবে। কারণ পাসপোর্ট বারবার নবায়ন করা অনেক বেশি ভোগান্তির বিষয়।
  • ই-পাসপোর্টের পাশাপাশি প্রচলিত এমআরপি পাসপোর্ট ব্যবস্থাও চালু থাকবে। কিন্তু আস্তে আস্তে এমআরপি উঠিয়ে নেওয়া হবে। নতুন করে আর এমআরপি ইস্যু করা হবে না। এমনকি এমআরপি পাসপোর্ট নবায়ন করে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
  • বাংলাদেশ পাসপোর্টের মান আরও উন্নত হবে এবং গ্লোবাল পাসপোর্ট পাওয়ার র‍্যাংকিংয়ে পাসপোর্টের মান বাড়বে।

ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবেঃ

ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে  অর্থাৎ যারা ১৮ বছরের কম সেই সকল আবেদনকারীদের তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

কোথায় ই-পাসপোর্ট আবেদন জমা দিবেনঃ

ই-পাসপোর্ট এর ফর্ম পুরণ করার পর তা উত্তরা আর পি ও, যাত্রাবাড়ী আর পি ও, আগারগাঁও আর পি ও তে জমা দিবেন। আর পি ও’ এর পূর্ণরূপ হচ্ছে রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিস।

ই-পাসপোর্ট কিভাবে করবেনঃ

ই-পাসপোর্ট করার ধাপ ৫টি। যথাঃ

  • আপনার এলাকায় ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে কিনা দেখে নিন। যদি হয় তাহলে নির্দিষ্ট লিংকে গিয়ে নিজের  বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী জেলা, থানার নাম তালিকাভুক্ত করুন।  বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস বা দূতাবাস এর তালিকা থেকে নির্দিষ্ট অফিস নির্বাচন করুন।
  • অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন। কোনো দালালের শরনাপন্ন হবেন না। অনলাইন এবং পিডিএফ ফরম পূরণের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়। আপনি সময় বাচানোর জন্য অনলাইন পেমেন্ট অপশন নির্বাচন করতে পারেন। পিডিএফটি পূরণ করে প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজসহ নির্বাচিত পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।
  • নির্ধারিত ব্যাংক বা অনলাইন ক্রেডিট কার্ড বা নির্বাচিত মাধ্যমে আপনার পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করুন।আপনি যদি ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করেন তবে পাসপোর্টের আবেদন পত্র সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে।
  • আপনার ছবি ও বায়োমেট্রিক প্রদানের জন্য এপয়েন্টমেন্ট ডেইটে পাসপোর্ট অফিসে যান। এক্ষেত্রে অবশ্যই পাসপোর্টের আবেদন এর প্রিন্ট কপি, পাসপোর্ট ফি পেমেন্ট স্লিপ, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদ, এবং অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে।
  • পাসপোর্ট তৈরি হলে তা সংগ্রহ করুন।

ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ফি সমূহঃ

ই-পাসপোর্ট মূলত হয়ে থাকে ৪৮ ও ৬৪ পাতার। ই-পাসপোর্ট তিন ধরনের হয়ঃ ‘অতি জরুরি’, ‘জরুরি’ ও ‘সাধারণ’। পাঁচ বছর ও ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্টের জন্য আলাদা পরিমাণের ফি জমা দিতে হয়। এই ক্ষেত্রে সময়ের কিছুটা ব্যবধানও আছে অর্থাৎ যদি নতুন পাসপোর্টকারী হয় তাহলে অতীব জরুরি হলে তিনদিনে, জরুরি সাতদিনে এবং সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫ দিনে পাসপোর্ট পাবে। তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টকারী তাদের পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরির জন্য দুদিনে, জরুরি তিনদিনে এবং সাধারণ পাসপোর্ট সাতদিনের মধ্যে পেতে পারে।

৫ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্টঃ

  • আপনার অতি জরুরি ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ২ দিনে পেতে ৭,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • জরুরি ৪৮ পাতার ‘পাসপোর্ট ৭ দিনে পেতে ৫,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • সাধারণ ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ১৫ দিনে পেতে ৩,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • সাধারণ ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ১৫ দিনে পেতে ৫,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • জরুরি ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ৭ দিনে পেতে ৭,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • অতি জরুরি ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ২ দিনে পেতে  ১০,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।

১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্টঃ

  • আপনি যদি ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার ‘সাধারণ পাসপোর্ট’ ১৫ দিনে পেতে চান তাহলে আপনার ৫,০০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • ৪৮ পাতার ‘জরুরি পাসপোর্ট’ ৭ দিনে পেতে চান তাহলে ৭,০০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • ৪৮ পাতার ‘অতি জরুরি পাসপোর্ট ২ দিনে পেতে চান তাহলে ৯,০০০ টাকা ফি দিতে হবে ।
  • ৬৪ পাতার ‘সাধারণ পাসপোর্ট’ ১৫ দিনে পেতে চান তাহলে ৭,০০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • ৬৪ পাতার ‘জরুরি পাসপোর্ট’ ৭ দিনে পেতে ৯,০০০ টাকা ফি দিতে হবে।
  • ৬৪ পাতার ‘অতি জরুরি পাসপোর্ট’ ২ দিনে পেতে ১২,০০০ টাকা ফি দিতে হবে।
সর্বশেষে মনে রাখবেন ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হতে পারে তবে এই ব্যাপারে এখনও পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভিসার বিষয়টি প্রচলিত ব্যবস্থার মতোই থাকবে। ভিসা কর্তৃপক্ষ বা দূতাবাসগুলো আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করবে। তারপরে  পাসপোর্ট এর বইয়ের পাতায় ভিসা স্টিকার, সিল দিতে পারবে বা বাতিল করে দিতে পারবে। তবে এটি  প্রচলিত ব্যবস্থার মত সময় সাপেক্ষ হবে না। এতে আপনার সময় যেমন বাচবে তেমনি আপনি হয়রানি থেকে মুক্ত হবেন। আশা করা যায় ই- পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এর অবস্থার উন্নতি ঘটবে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top