ডায়াবেটিস কমানোর কয়েকটি কার্যকরী উপায়

বিশ্বব্যাপি প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষ ডায়াবেটিস সমস্যায় ভোগেন । অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে,  হৃদরোগ,  কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া  এবং  অন্ধত্ব সহ নানান জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।  আমরা সবাই জানি ডায়াবেটিস একটিদীর্ঘমেয়াদী দীর্ঘমেয়াদী  হরমোনের অভাবজনিত রোগ।আমাদের শরীরে অগ্নাশয় নামক একটি  গ্রন্থি আছে, সেখান থেকেই ইনসুলিন নামক একটি হরমোন তৈরি হয়। এই হরমোনের অভাব বা কর্ম ক্ষমতা হ্রাসের মাধ্যমেই মূলত ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। কিছু খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক ব্যায়াম এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আজকে আমি ডায়াবেটিস কমানোর কয়েকটি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো, যেগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে আপনি সম্পূর্ণরূপে ডায়াবেটিস নিরাময় করতে না পারলেও অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

ডায়াবেটিস-কমানোর-কয়েকটি-কার্যকরী-উপায়
ডায়াবেটিস-কমানোর-কয়েকটি-কার্যকরী-উপায়

আরও পড়ুনঃ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা বিভিন্ন পদ্ধতি বা শারীরিক ব্যায়াম করে থাকি। কিন্তু তারপরও অনেক সময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা, তার মূল কারণ প্রতিদিন অজান্তেই বিভিন্ন ধরনের ভুল করে থাকি।

ডায়াবেটিস কমানোর জন্য তাজা ফল ও শাকসবজি খান

তাজা ফল ও শাক সবজিতে এন্টি-ডায়াবেটিস এর পরিমাণ বেশি থাকে। আমরা সবাই হয়তো এটা মেনে চলি যে, ডায়াবেটিস হলে কোন ধরনের ফল ও শাক-সবজি খাওয়া যাবে ও কোনটি খাওয়া যাবে না।কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো ফল বা শাকসবজি  তাজা খাওয়ার প্রতি গুরুত্বই দেই না। ফল ও শাক-সবজি যত পুরাতন হয় তাতে এন্টি-ডায়াবেটিস এর পরিমান কমতে থাকে কিছু কিছু উপাদান তো একেবারে নষ্ট  হয়ে যায়। সুতরাং ফল ও শাক-সবজি তাজা খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিন ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পাকা ফল খান

পাকা ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন ও এন্টি-ডায়াবেটিকস এবং অন্যান্য উপাদান কাঁচা ফলের থেকে বেশি থাকে । সুতরাং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁচা ফলের থেকে পাকা ফল অনেক বেশি কার্যকরী।

ডায়াবেটিস কমানোর জন্য লিকার চা হতে পারে গেম চেঞ্জার

চিনি ছাড়া লিকার চা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী।লিকার চা-এ প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা একটি ফলের চাইতে প্রায় ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি। আপনি যদি এন্টিঅক্সিডেন্ট এর জন্য খাদ্য তালিকায় ফল রাখেন, তাহলে আপনার খাদ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্যালরিও যুক্ত হবে। এক্ষেত্রে চিনি ছাড়া লিকার চা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গেম চেঞ্জার হতে পারে ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শর্করা জাতীয় খাবার কম খান

আমরা জানি, শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের মাত্রা কমে গেলে বা কার্যক্ষমতা কমে গেলে,রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় যাকে আমরা ডায়াবেটিস বলি। সুতরাং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বজায় রাখতে শর্করা জাতীয় খাবার কম খান।

পরিমিত ঘুমান

পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ জীবনযাপন করার জন্য পরিমিত ঘুম অপরিহার্য। ডায়াবেটিস কমানোর জন্য পরিমিত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। আপনি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে রাতে অবশ্যই কমপক্ষে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা  ঘুমান ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথির ব্যবহার

বহু ঔষধি গুণে ভরপুর এই মেথি সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি জানি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথি অনেক কার্যকরী। শরীরের শর্কারার মাত্রা কমিয়ে গ্লুকোজ সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি পান করলে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা অনেকখানি কমিয়ে আনা যায় । এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাত্রে 2 টেবিল চামচ মেথি বীজ এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, এবং সেটি সকালে খালি পেটে পান করুন ।

নিয়মিত হাঁটুন

প্রতিদিন কমপক্ষে 20 থেকে 25 মিনিট হাঁটুন। শরীরে সুগার সংবেদনশীলতা বাড়াতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শারীরিক ব্যায়াম বা পরিশ্রমের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক ব্যায়াম ওষুধের চাইতে অনেক বেশি কাজ করে থাকে। সুতরাং আপনি ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে চাইলে বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরের ফিটনেসের প্রতি নজর দিন।

Leave a Comment

Scroll to Top