শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে যে বিষয়গুলো জানা উচিত

আগের পোস্টে আমি শেয়ার বাজার কি, শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে, শেয়ার ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম। আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব শেয়ারবাজারে ইনভেস্ট করার পূর্বে যে বিষয়গুলো জানা উচিত বা শেয়ারবাজার রিচার্জ করার নিয়ম।

শেয়ার বাজার সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা না নিয়ে বা কোম্পানি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই না করে অনেকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ধরা খান। আপনি যদি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে লোকসানের সম্মুখীন হতে না চাইলে কোম্পানি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে বা কোম্পানির শেয়ার বাজার রিসার্চ করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করুন।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে যে বিষয়গুলো জানা উচিত

এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা শেয়ারবাজারের কিছু বেসিক নিয়মকানুন না জেনেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ধরা খেয়েছেন। আমরা সবাই জানি শেয়ারবাজার একটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। সুতরাং, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে হলে অবশ্যই কোম্পানি সম্পর্কে যাচাই বাছাই করা উচিত।

যাইহোক, আজকের এই পোষ্ট টি আমি আলোচনা করব, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে কোন বিষয়গুলো জানা উচিত  বা কোম্পানির শেয়ার বাজার রিচার্জ করার কিছু টেকনিক। চলুন শুরু করা যাকঃ

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে যে বিষয়গুলো জানা উচিত।

শেয়ারবাজারে লাভজনক এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এমন কোন কোম্পানির  শেয়ার ক্রয় করা উচিত যারা আপনাকে যৌতিক রিটার্ন দিবে। এজন্য শেয়ারবাজারে কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পূর্বে কোম্পানি সম্পর্কে কিছু তথ্য যাচাই বাছাই করা উচিত। আপনি যদি শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি ইনভেস্ট করার প্লান করে থাকেন তাহলে আপনাকে নিচের বিষয়গুলোর প্রতি অবশ্যই নজর দেওয়া উচিত।

১. কোম্পানির ইপিএস (EPS)

আপনি যদি কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার কথা ভেবে থাকেন  বা শেয়ারবাজারে কোন কোম্পানিতে ইনভেস্ট করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে আপনাকে প্রথমে কোম্পানির যে বিষয়টি জানতে হবে সেটি হল কোম্পানির ইপিএস (EPS) । EPS এর অর্থ হলো Earning Per Share । অর্থাৎ কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় কত তা অবশ্যই জানা উচিত।

কোন কোম্পানিতে ইনভেস্ট করার পূর্বে বা কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার পূর্বে,  কোম্পানির বিগত পাঁচ বছরের ইপিএস এর তথ্য যাচাই করা করুন। আপনি যে স্টক এক্সচেঞ্জ-এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবেন সেই স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানির ওয়েবসাইটে সকল কোম্পানিগুলোর জিপিএস এর তথ্য পাওয়া যায়।

ইপিএস যত বেশি হবে ততোই ভালো । সুতরাং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে কোম্পানির ইপিএস যাচাই বাছাই করা অত্যন্ত জরুরি। এবং যে কোম্পানীর ইপিএস বেশি সেই কোম্পানীতে বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে।

২. কোম্পানির আরওআই ( ROI)

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে দ্বিতীয় যে বিষয়টি যাচাই করা উচিত  সেটা হল কোম্পানির আরওআই (ROI)  । আরওআই (ROI) এর অর্থ হলো Return on Equity। অর্থাৎ মূলধন এর বিপরীতে আয়। কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের পূর্বে আপনাকে অবশ্যই কোম্পানি সম্পর্কে এই বিষয়টি যাচাই করা উচিত যে,  কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারদের বিনিয়োগ করা অর্থে কি পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে। অর্থাৎ কোম্পানির মূলধন এর বিপরীতে আয় কত টাকা সেটা অবশ্যই যাচাই করা উচিত। কোম্পানির আরওআই (ROI) সব সময় মূলধনের চাইতে বেশি হওয়া উচিত। 

কোন কোম্পানির আরওআই (ROI) মানে মূলধন এর বিপরীতে যদি ১৪-১৬ শতাংশ আয় হয়, তাহলে সে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা বা কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা লাভজনক হবে না। যদি কোম্পানির মূলধন এর বিপরীতে আয় ১৮  শতাংশের বেশি হয় তাহলে সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে।

৩. বেশি মূলধন কম ঋণ

শেয়ারবাজারে বা কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পূর্বে বা কোন কোম্পানির শেয়ার করার ক্রয় করার পূর্বে, আরেকটি যে বিষয় যাচাই করা উচিত সেটা হল কোম্পানির ঋণ  কি মূলধন এর চাইতে বেশি না কম। অবশ্যই সেই সকল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত যে সকল কোম্পানির মূলধন বেশি এবং ঋণ কম।  কেননা, আমরা সবাই জানি ঋণের সুদ কোম্পানির লভ্যাংশকে কমিয়ে দেয়।

কোম্পানির ঋণ মূলধনের এক শতাংশের মধ্যে থাকলে ভালো।  যদি কোম্পানির ঋণ মূলধনের দুই শতাংশ বাা তার বেশি হয়, তাহলে সে সকল কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করায় উচিত হবে।

সুতরাং কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পূর্বে সেই কোম্পানির  ঋণ সম্পর্কে তথ্য যাচাই বাছাই করা উচিত।

৪. সুনাম

কোম্পানি সম্পর্কে আরেকটি যে বিষয়ে যাচাই বাছাই করা উচিত তা হল কোম্পানির সুনাম কেমন, কে বা কারা কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন, উদ্যোক্তার সমাজে খ্যাতি কেমন বা ব্যবসায়িক সুনাম কেমন, কোম্পানীতে তার শেয়ায় কত শতাংশ এবং পরিচালনা পর্ষদ কাদেরকে নিয়ে গঠিত ইত্যাদি তথ্য অবশ্যই যাচাই বাছাই করা উচিত। 

যে কোম্পানির সুনাম অনেক ভালো এবং উদ্যোক্তার সামাজিক খ্যাতি কোম্পানির ও সকল প্রতিবেদন স্বচ্ছ এবং যে সকল কোম্পানি সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি সম্মান ও দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা আপনার জন্য ভালো হবে।

৫. কম পিই (PE) রেশিও

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে বা কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার পূর্বে কোম্পানি সম্পর্কে আরেকটি যে বিষয় যাচাই-বাছাই করা উচিত তা হল কোম্পানির পিই (PE) রেশিও । কোম্পানির পিই (PE) রেশিও হল মূল্য আয় অনুপাত।

কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূল্যকে ইপিএস দিয়ে ভাগ করলে পিই (PE) রেশিও পাওয়া যায়। যদি কোন পিই (PE) রেশিও ১২ হয় এবং এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারী ১২ বছরে তার বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত পাবেন। তাই সেই সকল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত যে সকল কোম্পানির পিই রেশিও কম।

যদি পিই (PE) রেশিও ২৫ এর বেশি হয় তাহলে সেই সকল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে না। সুতরাং কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পূর্বে কোম্পানির পিই (PE) রেশিও যাচাই বাছাই করা উচিত।

পরিশেষে, 

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ধরা খেতে না চাইলে অবশ্যই শেয়ারবাজার বা কম্পানি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করা উচিত। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আর একটি বিষয় হলো কেনার সময় লাভ করা অর্থাৎ ভালো শেয়ার কম টাকায় কিনতে পারা। আশা করি এই পোস্টটি আপনার উপকারে এসেছে। ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের জানাতে ভুলবেন না।যদি লেখাটি সম্পর্কে আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে, নিচের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন।  ধন্যবাদ!

By Moral

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Tish Cyrus Says Yes to Love Again with Dominic Purcell’s Proposal! Harry Kane Scores Brilliant Solo Goal, Spurs Fight Back Against Opponents Salah’s Scoring Streak: Liverpool Star Matches Suarez’s Home Record January 5 | Famous people’s birthday Today!